বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুবই দুর্বল। তাদের গার্ডস-পার্টস কোনোটাই নাই বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়ন এলডিপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা আর বিচক্ষণতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। সম্প্রতি সচিবালয়ে আগুন, নারায়ণগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় গুপ্ত হত্যা শুরু হয়েছে। বিভিন্নস্থানে হাসিনা পন্থীরা এখনও বহাল থাকায় বিদেশি সাহায্য নিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আমার ধারণা তা আরো তিন থেকে চার মাস থাকতে পারে। যার কারণে সরকারের কষ্টের লাঘব হচ্ছে না। তারপরও চেষ্টা করব কিছু রদবদল করে আপনাদের যে সমস্যা তা সমাধান করতে। তবে জনগণকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের রেহাই দেয়া হবে না।’
প্রশাসন এখনো হাসিনার হয়ে কাজ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসন এখনো জনগণের প্রশাসন হয়নি। প্রশাসন এখনো হাসিনার প্রশাসন হিসেবে কাজ করছে। এ প্রশাসন থেকে বের হওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস সাহেবকে একাধিক বার বলেছি। দয়া করে আপনি এই মুনাফেকদের বলয় থেকে বের হয়ে আসেন। যারা জনগণকে কষ্ট দিয়েছে ও হাসিনার পদলেহন করেছে তাদের হাত থেকে দেশকে বের করেন। কি কারণে জানি না উনি (ড. ইউনুস) ওদের শিকলে আবদ্ধ। যারা হাসিনার দালাল, জনগণের সাথে মুনাফেকি ও জনগণকে কষ্ট দিয়েছে; তারা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অব্যাহতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘নমরুদ ও ফেরাউন আর আসবে না। ১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগের যে অবস্থা হয়েছে আওয়ামী লীগেরও একই অবস্থা হবে। অতীতে হাসিনার যেসব অপকর্ম, সবই ছিল হিন্দুস্তানকে খুশি করার জন্য। এরা বেঈমান ও মুনাফিকের বংশধর। নিজের (হাসিনা) বাবাও যেমন যুদ্ধের সময় পাকিস্তান পালিয়ে গেছে; তেমনি তিনিও হিন্দুস্তান পালিয়েছেন। কোন কালেও তাদের কোন নীতি-নৈতিকতা, সততা-দক্ষতা ও মনুষ্যত্ব ছিল না। শেখ হাসিনা আমাকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বেগম জিয়ার সাথে বেঈমানি ও জনগণের সাথে মুনাফেকি হবে বলে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। সর্বোপরি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মানুষ হিসেবে আমার দ্বারা তা সম্ভব হয়নি।’
চর খাগরিয়া খাদিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ইউনিয়ন এলডিপির সভাপতি জাফর আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আমিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ওমর ফারুক সানি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি এম এয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুর আলম, উপজেলা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, চন্দনাইশ পৌরসভার সভাপতি আইনুল কবির, দোহাজারী পৌরসভার আহ্বায়ক লেয়াকত আলী ও উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক হোসেন উদ্দিন আহমদ।
সম্মেলন শেষে জাফর আলমকে সভাপতি ও মুহাম্মদ আমিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট খাগরিয়া ইউনিয়ন এলডিপির কমিটি গঠন করা হয়।